কুমিল্লার দেবিদ্বারের ট্রাক্টরচালক আমির হোসেন (২৫) প্রতিবেশী লাইলি আক্তারের (৩০) সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে প্রায়ই শারীরিক সম্পর্ক হতো। একদিন অন্তরঙ্গ অবস্থায় লাইলির সঙ্গে দেখে ফেলায় নিজের পাঁচ বছরের শিশু ফাহিমাকে হত্যা করে বাবা।
প্রেমিকা লাইলির পরিকল্পনা অনুযায়ী আমির পরকীয়া প্রেম ধামাচাপা দিতে শিশু ফাহিমাকে হত্যা করে। তারা আরও পরীকল্পনা করে। শিশু ফাহিমাকে মেরে ফেললেই পথ পরিস্কার। পরে স্ত্রীকে খুন অথবা ডিভোর্স দিয়ে সংসার শুরু করবেন তারা।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাবার পরিকল্পনায় নিজের মেয়ে ফাহিমা হত্যার নির্মম ঘটনার বর্ণনা দেন র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এ ঘটনায় কুমিল্লার দেবিদ্ধার ও রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে গ্রেফতাররা হলেন- নিহতের বাবা আমির হোসেন (২৫), রবিউল আউয়াল (১৯), রেজাউল ইসলাম ইমন (২২), মোসা. লাইলি আক্তার (৩০) ও সোহেল রানা (২৭)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৭ নভেম্বর বিকেলে কুমিল্লার দেবিদ্বারে ৫ বছরের শিশু ফাহিমা আক্তার নিখোঁজ হয়। শিশু ফাহিমার বাবা আমির হোসেন দেবিদ্বার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরে ১৪ নভেম্বর পুলিশ দেবিদ্বারের কাচিসাইর গ্রামের একটি ডোবা থেকে ভিকটিমের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় র্যাব-১১ ছায়া তদন্ত শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত বাবাসহ ৫ আসামিকে গ্রেফতারে সমর্থ হয়।
হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হলো কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন আরও বলেন, শিশু ফাহিমাকে হত্যার পর গরুর খাবারের ২৫ কেজির একটি বস্তায় মরদেহ ভরে ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল মরদেহ। সেটিই প্রথম আমলে নেয়
র্যাবের গোয়েন্দা সদস্যরা।
বস্তার খোঁজে পাশ্ববর্তী দুটি গরুর খামারে অভিযানে যায়। সেখানে ইমনের বাবার খামারে গিয়ে ২৫ কেজি গরুর খাবারের বস্তা দেখে র্যাব সদস্যরা। এরপর ইমনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে হত্যার মূল রহস্য। এরপর একে একে গ্রেফতার করা হয় বাবা আমির হোসেনসহ অন্য আসামিরা।